কমলাপুরীর স্বপ্নীল চটির জগতে আপনাকে স্বাগতম। নিত্য নতুন-পুরাতন, সব ধরনের বাংলা চটির স্বাদ নিতে শুধু কমলাপুরীর চটি সাইটে নিয়মিত ভিজিট করুন। দেখুন পড়ুন- আপনার বন্ধুকেও কমলাপুরীর চটি সাইটের সন্ধান দিন

Pages

Monday, July 09, 2012

চন্দনা এখন নিউ জার্সিতে

লিখেছেন- 'Dada of India'

চন্দনা আমার জীবনের একটি অধ্যায় ! সেই অধ্যায় কে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই আমার কাছে ! কারণ মঞ্জুর পরে একমাত্র আমাকে নিজের অপরিসীম ভালবাসা দিয়ে আগলে রেখেছিল চন্দনা !

সেই চন্দনার যখন বিয়ে হয়ে গেল তখন আমি অনেক টা ভেঙ্গে পরেছিলাম ! কিন্তু চন্দনাই আমাকে কোনদিন ভাঙ্গতে দেয় নি ! প্রায়ই আমাকে ফোন করে আমাকে বাঁচার অনুপ্রেরণা জোগাত চন্দনা ! ওর কোথায় আমি নাকি ওর ভগবান ! কারণ আমি নাকি আজকের চন্দনার জন্মদাতা ! আমি যদি না থাকতাম তাহলে হয়ত চন্দনা হারিয়ে যেত কোন আঁধার মাঝারে ! যেই মাঝার থেকে আমি ওকে নিয়ে এসেছিলাম আমার বাড়ির কাজ করার জন্য ! যেখানে ও কোনদিন কাজের মেয়ে হিসাবে ব্যবহার পায়নি ! বরণ পেয়েছে বাড়ির একজন সদস্য হিসাবে ! ও কেন কোনদিনই ওর বাবা মাও ভাবতে পারিনি যে চন্দনার জীবনে এতবড় পরিবর্তন আসবে ! আজ যদি আমি না থাকতাম তাহলে আজ হয়তো চন্দনা অন্য কোনো লোকের বাড়ি কাজ করে বেঁচে থাকত হয়ত বা কোনো কুলি কামিন লোকের সাথে বিয়ে হয়ে সেই অভাব, অশিক্ষা আর গরিবির মধ্যে জীবন কাটাতে হতো ! আমি নাকি চন্দনার জীবনের দরজা খুলে দিয়েছি এক নতুন জীবনের জন্য ! এসব কথা আমার নয় ! সবই চন্দনার ! এই সব কথা নাকি চন্দনা তার ডায়রিতে লিখে রেখেছে ! তাই আমি আজ চন্দনার চোখে চন্দনার ভগবান ! যখনি চন্দনা ভারতে আসে তখনি একবার করে নিজের ভগবানের সানিধ্য পেতে ছুটে আসে আমার কাছে ! সে আমি রুপি ভগবানের কাছে কিছুই আর চায়না ! আজ সে তার ভগবানকে তার প্রাপ্য পুজো দিতে চায় !
কত বোঝাব চন্দনাকে ! কিন্তু চন্দনা সব বুঝেও কিছুই বুঝতে চায়না ! কোথায় কোথায় বলে ওঠে " আমার ভগবানের যদি কেউ কোনদিন অপমান করে তাকে আমি ছাড়ব না ! যদি আমার স্বামীও আমার ভগবানের নামে কিছু বলতে আসে তাহলে তাকে আমি ছেড়ে দিতে পারি কিন্তু আমার ভগবান কে নয় !!"
খামকা আমার মত একটা চরিত্রহীন লম্পট কপর্দক শুন্য বিবেক হীন মানুসত্তহীন লোককে চন্দনার মত শিক্ষিত সুন্দরী মেয়ে কি করে যে ভগবানের আসনে বসাতে পারে সেটাই আমি এখনো ভেবে পাই নি !!
এবার অনেক দিন পর চন্দনা এসেছিল ! সরাসরি এখন আমার বাড়িতে ও আর আসতে চায় না ! ও চায়না আমার স্ত্রীর মুখোমুখি হোতে ! কারণ চন্দনার মনে আমার স্ত্রী সম্পর্কে যে নেগেটিভ মনোভাব তৈরী হয়েছিল সেটা আজও যায়নি !

আমার স্ত্রী কিন্তু কোনদিনই চন্দনার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি ! উল্টে চন্দনাকে নিজের মেয়ের মতই দেখেছেন ! তাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন নিজে হাতে করে ! তাতেও চন্দনার মনোভাব তার উপর থেকে একটুও সরেনি ! চন্দনার এই মনোভাবের কারণ আমি একদিন জিজ্ঞাস্য করতে চন্দনা আমাকে উত্তর দিয়েছিল " দেখো কাকা একটা প্রবাদ আছে যে সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে আর সংসারের সৃবিদ্ধি হয় পতির কর্মফলে !! তোমার সংসারে তোমার কর্মফলই একমাত্র জিনিস যেটা আছে একজন বৌএর যে ধর্ম স্বামী কে সুখ দেওয়া বা সুখী করা সেটা কাকীর মধ্যে নেই তাই কাকি যতই ভালো হোক না কেন আমার ভগবান কে কষ্ট যে দেয় তাকে আমি কোনদিনই ভালো চোখে দেখতে পারি না !!!"


প্রায় প্রতিবারই চন্দনার কাছ থেকে এই রকম জবাব পেয়ে পেয়ে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম ! ওকে শুধু বলেছিলাম " দেখ চন্দনা ! আজ তুই যেখানে দাঁড়িয়ে আছিস তার জন্য তোর কাকিমার অবদান কম নয় ! যদি তোর কাকিমা তোকে কাজের মেয়ে হিসাবে দেখত , তোকে যদি পড়তে না দিত কিম্বা তোকে যদি বাড়ির একজন মেয়ে বলে মেনে না নিত তাহলে কি তুই আজকের এই চন্দনা হতে পারতিস?? কিন্তু ভবি ভুলবার নয় !!সেই এক কথা আমি কাকিমাকে ঘেন্না করি না শ্রদ্ধা করি কিন্তু মন থেকে তাকে সম্মান করতে কোনদিন পারব না ! আমি জানি আমার জীবনে তার অবদান কম নেই কিন্তু আমার মনের মধ্যে যে মানুষটি বসে রয়েছে বা যে মানুষটির জন্য আজ তারা পরিচিত সেই মানুষ কে সুখী না করতে পারত একটা চরম ব্যর্থতা ! তাই আমার নজরে আমার কাকীর কোনো মূল্য নেই ! আর তোমাকেও আমি রিকোয়েস্ট করছি কাকীর হয়ে আমার কাছে সাফাই গাইতে এসোনা ! আমার জীবনের সব কিছু শুধু তুমি আর যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন তুমি আমারি থাকবে !!

হে ভগবান !! মেয়েটার বিয়ে হয়ে যাবার এত বছর বাদেও আমাকে বুকের মাঝে ধরে রেখেছে?? মনের মধ্যে সংসয় জাগে তাহলে কি ওরা দাম্পত্য জীবনে সুখী নয়?? না থাকতে পেরে জিজ্ঞাস্য করে ফেলি ! " হ্যা রে চন্দনা ! তুই যে আমাকে তোর মনের মাঝে বসিয়ে রেখেছিস ! তাহলে তোর বর কে কোথায় স্থান দিয়েছিস !!?"
- কাকা তুমি আছ আমার ভগবানের আসনে আর আমার হাসবেন্ড আছে আমার স্বামীর আসনে !! তাকে আমি কোনদিন সহুখী দেখতে পারব না বা তাকে কোনরকম ভাবে অসুখী হতে দেব না ! সেখানে আমার পত্নীর ধর্ম আমি পালন করে যাচ্ছি !!
একটা নারীর দৈত্য সত্তা ! আমাকে মুগ্ধ করে রাখে ! আমি বলি এবার তো অনেক হলো ! আর আমিও বার হয়ে গেছি প্রায় ! এবার তো এই সব মাথা থেকে তাড়া ! বয়স বাড়ছে !
নাগ কাকা ! তোমাকে দেবার জন্য আমার কিছুই নেই তাই আমার দেহটাকে তোমার কাছে তুলে ধরি আমার ঠাকুরের প্রসাদের জন্য !! এতে ঠাকুরও খুসি হয় আর যে পুজো দেয় তার দেওয়া নৈবিদ্য তার প্রানের ঠাকুর নিলে সেও খুশি হয় !!

চন্দনা ! এমনি একটি নারী যার সব কিছুই আমার ভালো লাগে ! তাকে দেবার মত হয়ত আমার কাছে আজ কিছুই নেই ! কিন্তু সে বার বার ফিরে আসে আমার জীবনে ! আমার সকল সুখের সকল দুখের সাথী ! চন্দনা !! আমার বেশ ভালো মনে আছে যখন চন্দনার বিয়ে হয়ে যায় তখন আমি মনে প্রাণে চেয়েছিলাম চন্দনা যেন সুখী হয় ! তাই বিয়ের পরেই যখন চন্দনা ওর বরের হাত ধরে সুদুর আমেরিকাতে পারি দিল সেদিন মনে হয়েছিল কেউ যেন আমার কলিজাটাকে উপরে নিয়ে চলে গেছিল ! তখন হটাত করে সমস্ত দুঃক্ষ ভুলে থাকার জন্য আমি নেশার মাত্র বাড়িয়ে দিয়েছিলাম !কিন্তু যতোই মাল খাইনা কেন আমার কেন জানিনা নেশা হত না !! শেষে নেশার নেশায় আমাকে নেশারী করে দিতে থাকলো ! আমি প্রায় প্রতিদিন ৩ বোতল করে হুইস্কি উড়িয়ে দিতে থাকলাম !ফলে আমার পরিবারের সাথেও আমার দুরত্ব বাড়তে থাকলো ! আমার মেয়ে সে অনেক বড় হয়ে গেছে সে আমাকে সব সময় আগলে থাকার চেষ্টা করতে থাকলো ! আমাকে সে সব সময় মায়ের শাসনে রাখার চেষ্টা করতে থাকলো ! যেহেতু সে তখন সবে টিন এজে চলে এসেছে সমস্ত সম্পর্কের তার গুলো জোড়ার আর সেগুলোকে অনুভব করার প্রাণপন চেষ্টা করছে ! আর তার সেই অদম্য প্রচেষ্টা আর তার সাথে চন্দনার প্রতিদিন ফোনে কথা বলা ! চন্দনার উপদেশ কি করে আমাকে খুশি রাখা যায় ! কি করে আমার নেশা ছাড়ানো যায় আর তার সাথে কি করে আমাকে আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায় !! সত্যি বলছি আমার মেয়ে বলে বলছি না ! আমার মেয়ে আমার মা হয়ে সমস্ত রকম ভাবে আমাকে সামলাতে শুরু করলো ! যখনি সে দেখত তার মা কোনো রকম ভাবে আমার সাথে একটুও খারাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করছে তখনি সে সেখানে গিয়ে তার মায়ের সামনে রুখে দাঁড়াতে শুরু করে ছিল ! আমার মেয়ে আমার সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার একটা মুখ্য কারণ ! হয়ত সে তখন ছোট ছিল কিন্তু চন্দনার পরামর্শে সে একজন দক্ষ জননী হয়ে আমার জীবনের মোড় টাই ঘুরিয়ে দিল ! আমার মেয়ে কোনদিনই আমার অন্ধকার জীবনের কথা জানতে পারেনি বা চন্দনাও কোনদিন তাকে কিছুই বলে নি ! কিন্তু সংসারে থাকতে থাকতে সেও বুঝতে পেরেছিল আমার প্রতি তাদের মায়ের অবহেলার কথা !
সত্যি বলছি আমি কিন্তু কোনদিন আমার ছেলে মেয়েদের কোনো কথা বলিনি ! কিন্তু তারা আমার গুমরে থাকা চেহেরা দেখে বুঝতে পেরেছিল যে আমি কি ভাবে বেঁচে আছি !
দেখলেন তো ! সত্যিই আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে ! বলছিলাম চন্দনার কথা চলে এলে আমার মেয়ের কথা ! তবে একটা সত্যি কথা বলব আজ আপনাদের ! আমি আজ যে বেঁচে আছি সেটা মাত্র আমার মেয়ের জন্য ! মেয়ের মধ্যে আমি আমার মাকে খুঁজে পেয়েছিলাম ! আর আমার মেয়েও আমাকে তার ছেলের মতো বুক দিয়ে আগলে রেখেছিল !!
- বাবা তুমি এখনো ঘুমোয়নি?? তারাতারি শুয়ে পর ! কাল সকালে উঠতে হবে না ! অফিস যেতে হবে না ? কিম্বা - বাবা আর নয় আজ তুমি অলরেডি ৩ পেগ মাল খেয়ে নিয়েছ !! আর নয় ! এই ভাবে যদি মাল খেতে থাক তবে শরীর খারাপ হবে !
কখনো সখনো আমি ওকে বকতে গেছি " যা তুই ছোট আছিস ছোটর মতো থাক! "
- ঠিক আছে আমি তোমার সাথে আর কথা বলব না !!
সত্যি বাপ মেয়ের এই যে সম্বন্ধ সেটা যে ভগবান কি দিয়ে তৈরী করেছেন সেটা আজ আমি বুঝে উঠতে পারলাম না ! আমার মেয়ে আমার মা !! সেই মাই আমাকে একদিন বলল " বাবা তুমি তো অনেক দিন বাড়ি ( মানে কোলকাতা ! আমার নিজের বাড়ি ! যেখানে আমার মা বাবা সবাই আছে !!) যাওনি ! আর ঠাকুমা দাদুর কোনো খবর নাওনি?? যাও কদিনের জন্য কোলকাতা ঘুরে আসো !!
মেয়ের এই কোথায় আমার মনেতে একটা খুশির জওয়ার বয়ে গেল ! কবে যাব সেটাই যখন চিন্তা করছিলাম তখনি আমাকে মেয়ে বলল " কি চিন্তা করছ বাবা?"
- না মা কিছুই চিন্তা করছিনা ! ভাবছি কবে কোলকাতা গেলে ভালো হয় !
- ও তোমাকে চিন্তা করতে হবে না ! চন্দনা দি তোমার টিকিট করে আমাকে মেল করে দিয়েছে ! তুমি কালই যেত এয়ার এর ফ্লাইটে কোলকাতা যাচ্ছ !!
- চন্দনা?? চন্দনা কেন আমার জন্য টিকিট পাঠাবে?? আমায় কি ভিখারী ??
- না না তা নয় ! চন্দনা দি কলকাতায় আসছে পরশু ! তোমাকেও কলকাতায় যেতে বলেছে আর টাই তোমার টিকিট আমাকে মেল করে দিয়েছে !!
আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল ঝরে পড়তে থাকলো ! সেটা অপমানের না আনন্দের সেটা আমি সেদিন বুঝতে পারিনি ! বুঝলাম যেদিন চন্দনার সাথে আমার দেখা হলো কোলকাতা এয়ার পোর্টে ! 

cont....

No comments:

Post a Comment

Dear Friends! If You Think This Site Useful For U, Please Dont Forget To Leave A Valuable Coment! Thnx.
বন্ধুগন কমলাপুরী'র চটি সাইটটি যদি আপনাদের ভাল লাগে তবে কষ্ট করে একটা রিপ্লাই দিন। আপনাদের সুচিন্তিত মতামত ও মুল্যবান পরামর্শ এই সাইটের উন্নয়নে বিশেষ ভুমিকা রাখবে। ধন্যবাদ।